আমরা মানুষেরা যোগাযোগ-সর্বস্ব জীব। সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি – আমাদের জীবনের আদ্যোপান্ত গড়ে উঠেছে যোগাযোগের ভিত্তিতেই। নিঃসঙ্গ আদি মানবের সঙ্গীর আকাঙ্ক্ষা থেকে যেই যোগাযোগের উদ্ভব, আজ অবধি ক্রমাগত তা চলছেই।
অবচেতন মনোভাবনায় নিজের সাথে নিজের কথা কিংবা সচেতন অঙ্গভঙ্গি-ইশারায় নিকটজনকে কিছু বুঝানোর চেষ্টা দিয়ে শুরু যোগাযোগের। তারপর সৃষ্টি হল সাংকেতিক চিহ্ন, মৌখিক ভাষা, লিখন পদ্ধতি সহ যোগাযোগের বহু মাধ্যম। হালের আলোকচিত্র, চলচ্চিত্র, এমনকি মিম (Meme)-ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
যোগাযোগের পরিধিও নিরন্তর বেড়েই চলছে। পরিবার, সমাজের গণ্ডি পেরিয়ে আমরা এখন মহাবিশ্বের অন্যান্য জগতের প্রাণীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছি।
যোগাযোগের এই অবিরাম পথচলাকে মসৃণ করতে, যোগাযোগের প্রচেষ্টাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে বিশেষজ্ঞগণ তাই যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম, বিভিন্ন ধরণকে সুনির্দিষ্ট করেছেন।
যোগাযোগের ধরণ
অন্য সকল মানবীয় আচরণের মত যোগাযোগেরও আছে কিছু ধরণ, যোগাযোগের জন্য থাকে কোনো কারণ। আমরা কখনো কথা বলে যোগাযোগ করি, কখনো আবার যোগাযোগের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখি। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গুটিকয়েক আত্মীয় আর বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করা আমরাই পেশাগত, ব্যবসায়িক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় এবং অন্যান্য কারণে অসংখ্য মানুষের সাথে যোগাযোগের সম্পর্ক গঠন করি।
যোগাযোগের এই নানাবিধ পদ্ধতি এবং প্রেক্ষিতের আলোকে যোগাযোগ প্রথমত দুই ধরণের। যথা –
- পদ্ধতিগত ধরণ – Methodical Types
- প্রেক্ষিতগত ধরণ – Contextual Types
পদ্ধতিগত ধরণ – Methodical Types
যোগাযোগের প্রধানতম উপাদান হচ্ছে ‘বার্তা’ (Message)। এই বার্তা কোন পদ্ধতি বা মাধ্যমে প্রেরণ করা হচ্ছে, সেটিই যোগাযোগের পদ্ধতিগত ধরণের মুখ্য বিষয়।
‘দিনকাল কেমন কাটছে?’ বার্তাটি পৌঁছাতে নিকটবর্তী কারো সাথে চোখের ইশারাই হয়তো যথেষ্ট। একটু দূরে থাকা ব্যক্তিকে একই বার্তা দিতে আমাদের সশব্দে কথা বলতে হয়। দৃষ্টির অগোচরে থাকা ব্যক্তির সাথে প্রাণবন্ত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমরা হয়তো বেঁছে নিবো ভিডিও কলকে।
স্যার আলফ্রেড জুলস ফ্রেডি এয়ের লিখেছেন, “যোগাযোগ শব্দটি আমরা ব্যবহার করি – কখনো কি পাঠানো হয়েছে বুঝাতে, কখনো কীসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে জানতে, কখনো আবার এর পুরো প্রক্রিয়াকে বুঝাতে।”1উদ্ধৃতি: “We use the word ‘communication’ sometimes to refer to what is so transferred, sometimes to the means by which it is transferred, sometimes to the whole process.”; প্রবন্ধ: What is Communication?; লেখক: Alfred Jules Freddie Ayer;
অর্থাৎ, যোগাযোগে বার্তার ন্যায় মাধ্যমও গুরুত্বপূর্ণ। বিখ্যাত যোগাযোগবিদ মার্শাল ম্যাকলুহানের ভাষ্যমতে, “মাধ্যমই বার্তা”।2উদ্ধৃতি: “The medium is the message”; গ্রন্থ: Understanding Media: The Extensions of Man; লেখক: Marshall McLuhan; প্রকাশনী: McGraw-Hill; প্রকাশকাল: ১৯৬৪;
সাধারণত, তিনটি মাধ্যম বা পদ্ধতিতে যোগাযোগ হয়ে থাকে। সেগুলো হচ্ছে –
- বাচনিক যোগাযোগ – Verbal Communication
- অবাচনিক যোগাযোগ – Non-Verbal Communication
- দৃশ্যত যোগাযোগ – Visual Communication
বাচনিক যোগাযোগ – Verbal Communication
বাচনিক যোগাযোগ হচ্ছে ভাষা-নির্ভর যোগাযোগ। ধ্বনি ও শব্দের সমন্বয়ে গঠিত অর্থবোধক বাক্যই বচন। বচনের সামগ্রিক রূপ হচ্ছে ভাষা, যা থেকে ভাষাগত বা বাচনিক যোগাযোগের উৎপত্তি।
ভাষার সুনির্দিষ্ট অর্থবাচকতা আছে। আমরা ধ্বনির সাহায্যে যেমন মুখে কথা বলতে পারি, তেমনি বর্ণের সাহায্যে হাতে লিখেও যোগাযোগ করতে পারি। কথায় বা লিখে, ভাষার মাধ্যমে আমরা পারস্পারিক যে যোগাযোগ করি, তাই বাচনিক যোগাযোগ।
অবসরে আমরা কেউ বন্ধুদের সাথে গল্প করি, কেউ ভালবাসি বই পড়তে বা গান শুনতে। কেউ আবার সিনেমা দেখি। গল্প বা কথা, বই, গান, সিনেমা – এসবেরই মাধ্যম ভাষা বা বচন।
ভাষাভিত্তিক এসব মাধ্যমের কল্যাণে আমাদের পারস্পারিক যে বোঝাপড়া হয়, যেমন বইয়ের গল্পে ডুবে যাওয়ার মাধ্যমে লেখকের সাথে পাঠক কিংবা গানের সুরে হারিয়ে যাওয়া শ্রোতার সাথে শিল্পী, এগুলোই বাচনিক যোগাযোগ।
অবাচনিক যোগাযোগ – Non-Verbal Communication
চোখ বা হাতের ইশারা, মুখভঙ্গি ইত্যাদি শারীরিক অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমেও আমরা পারস্পারিক যোগাযোগ করে থাকি। এধরণের যোগাযোগকে বলা হয় অবাচনিক যোগাযোগ।
প্রখ্যাত যোগাযোগবিদ জোসেফ এ. ডেভিটো-র মতে, “অবাচনিক যোগাযোগ হলো এমন সব বার্তা, যেগুলো প্রেরণের মাধ্যম অঙ্গভঙ্গি, চোখের ইশারা, মুখভঙ্গি, ইঙ্গিত, দূরত্ব, কণ্ঠস্বরের ওঠানামা, এমনকি নীরবতাও।”3উদ্ধৃতি: “Non-verbal communication is the message that are communicated by body posture, eye movements, facial expression, gesture, use of space, vocal volume and rate, and even silence.”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
এই সংজ্ঞার “কণ্ঠস্বরের ওঠানামা” শব্দদ্বয় বিশ্লেষণ করলে পরিলক্ষিত হবে যে, বাচনিক যোগাযোগেও অবাচনিক যোগাযোগের উপস্থিতি থাকে। যেমন, বিশেষ কোনো কথায় জোড় দিতে কিংবা রাগের মুহূর্তে আমরা উচ্চস্বরে কথা বলি। পক্ষান্তরে, গোপনীয় কিছু বলার সময় আমরা একদম নিচু স্বরে কথা বলি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আলবার্ট মেহরাবিয়ান (Albert Mehrabian) এক গবেষণায় দাবি করেন, যোগাযোগের ৫৫% হচ্ছে শারিরিক ভাষা, ৩৮% কণ্ঠস্বর এবং মাত্র ৭% হচ্ছে বাচনিক ভাষা। অর্থাৎ, পরিস্থিতিভেদে আমাদের যোগাযোগের প্রায় ৯৩%-ই অবাচনিক যোগাযোগ! 4 প্রবন্ধ: How Much of Communication Is Nonverbal?; প্রকাশনী: University of Texas;
চার্লি চ্যাপলিন – নামটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। মূকাভিনয় দিয়ে যিনি সমগ্র বিশ্বকে মাতিয়েছিলেন, শতাব্দী পেরিয়েও যেসব চলচ্চিত্র আজও সমান প্রাসঙ্গিক, অর্থবহ। অথচ সেসব চলচ্চিত্রের সবটা জুড়েই যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ছিল কেবল শারীরিক অঙ্গভঙ্গি। অবাচনিক যোগাযোগের এরচেয়ে শ্রেষ্ঠ উধাহরন আর কি হতে পারে!
দৃশ্যত যোগাযোগ – Visual Communication
দৃশ্যমান কোনো বস্তু যখন যোগাযোগের মাধ্যম রূপে আবির্ভূত হয়, তখন তাকে দৃশ্যত যোগাযোগ বলে। ইন্টারনেট ভিত্তিক যোগাযোগের লক্ষ্যে বাচনিক ও অবাচনিক যোগাযোগের সংমিশ্রণেই মূলত যোগাযোগের নবীনতম এই ধারার উৎপত্তি ও বিকাশ।
নাটক ও চলচ্চিত্র, ইনফোগ্রাফিক ও গ্রাফিক ডিজাইন, টুডি ও থ্রিডি অ্যানিমেশন, ভিডিও গেম, ইমোজি, গিফ (GIF), মিম (Meme) ইত্যাদি দৃশ্যত যোগাযোগের উল্লেখযোগ্য প্রতিরূপ। এধরণের যোগাযোগে যোগাযোগকারীর ভূমিকায় রাখা হয় কাল্পনিক বা অভিনিত চরিত্র, যাদের কথা এবং অঙ্গভঙ্গি দিয়ে প্রকৃত প্রেরক বার্তা প্রেরণ করে। ক্ষেত্রবিশেষে সরাসরি বা প্রত্যক্ষ যোগাযোগকারী ব্যতিতই বার্তা উপস্থাপিত হয়।
ইনফোগ্রাফিকে অসংখ্য তথ্য এবং জটিল পরিসংখ্যান সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করা হয়। গ্রাহক নিজেই ইন্টারনেট থেকে ইনফোগ্রাফিক-রূপী এসব বার্তা গ্রহণ করে। প্রেরককে প্রত্যক্ষভাবে এধরণের বার্তা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে হয় না।
মিমগুলোতে কাল্পনিক বা অভিনিত চরিত্রগুলোর শারিরিক অঙ্গভঙ্গি কিংবা সেগুলোর মুখ দিয়ে বলিয়ে নেয়া কথার মাধ্যমেই বার্তা প্রেরিত হয়। চরিত্রগুলোকেই তখন বার্তার প্রেরকের ভূমিকায় দেখা যায়, বার্তার প্রকৃত প্রেরক আড়ালেই থাকে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের অনেকে লিখিত যোগাযোগ (Written Communication) এবং শ্রবণ (Listening)-কেও যোগাযোগের স্বতন্ত্র মাধ্যম বা পদ্ধতি হিসেবে চিহ্নিত করেন।
প্রকৃতপক্ষে, লিখিত যোগাযোগ বাচনিক যোগাযোগেরই অংশ বিশেষ, যেখানে ভাষার লৈখিক রূপ ব্যবহার করে যোগাযোগ সাধিত হয়। সেই ভাষা হতে পারে বাংলা-ইংরেজির মত বহুল প্রচলিত ভাষা কিংবা চিহ্ন-আকারের সমন্বয়ে সাংকেতিক ভাষা।
শ্রবণ-ও যোগাযোগের মাধ্যম বা পদ্ধতি নয়, বরং যোগাযোগ প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ-বিশেষ। বাচনিক যোগাযোগ মৌখিক কথার মাধ্যমে সংগঠিত হলে, প্রেরক বার্তা হিসেবে যা বলে, গ্রাহক তা মনোযোগ সহকারে শোনাই শ্রবণ।
প্রেক্ষিতগত ধরণ – Contextual Types
“আমাদের প্রত্যেকের কাছেই যোগাযোগ একটি স্বাভাবিক, প্রয়োজনীয় ও স্বতঃবর্তমান কাজ। আমরা যোগাযোগের সম্পর্কে নিয়জিত হই পরিবেশ, বিশেষত আমাদের চারপাশের পরিবেশের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে।”5উদ্ধৃতি: “To all of us, communication is a natural, necessary, omnipresent activity. We enter into communication relationships because we want to relate to environment, especially the human environment, around us.”; গ্রন্থ: Men, Women, Messages, and Media : Understanding Human Communication; লেখক: Wilbur Schramm; প্রকাশনী: Harper & Row; প্রকাশকাল: ১৯৮২;
পরিচিতজনদের সাথে আমাদের যোগাযোগ হারহামেশাই হয়। ব্যবসায়-বাণিজ্য, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রচারণা, রাষ্ট্রীয় বা কূটনীতি প্রভৃতির পরিপ্রেক্ষিতেও আমরা যোগাযোগ নিয়মিতই যোগাযোগ করি।
যোগাযোগের এসব প্রেক্ষিত বা কি উদ্দেশ্যে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তার ভিত্তিতে যোগাযোগকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন:
অন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ – Intrapersonal Communication
যোগাযোগের মৌলিক ও প্রাথমিক রূপ হচ্ছে অন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ। ব্যক্তির অন্তরে অর্থাৎ নিজের সাথে নিজের যে যোগাযোগ সংগঠিত হয়, তাই অন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ।
আমরা এক মুহূর্তের জন্যও যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন থাকি না। প্রতি মুহূর্তেই আমরা কিছু না কিছু চিন্তা-ভাবনা করি, তার-ই প্রেক্ষিতে অন্যান্য কর্মকাণ্ড করে থাকি। আমরা যখন কিছু নিয়ে চিন্তা করি, তখন মস্তিষ্ক তা বার্তা হিসেবে গ্রহণ করে আমাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোকে কর্মব্যস্ত করে তোলে।
ভাবনা থেকে মস্তিষ্কের বার্তা গ্রহণ, তারপর সেই বার্তার নির্দেশনা মত শারিরিক কার্যক্রম – নিজের অভ্যন্তরে আমাদের এই অংশগ্রহণমূলক যোগাযোগ প্রক্রিয়াই অন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ।
অবুঝ শিশুরা যখন ক্ষুধার্ত বা অস্বস্তি অনুভব করে, তখন কেঁদে ওঠে। কাঁদার পূর্বের বিষয়গুলো যেমন, অনুভূতি, ভাবনা, কাঁদার প্রেষণা – এসবই অন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ।
যোগাযোগের অন্যান্য প্রেক্ষিতে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হলেও অন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ হয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে। তাছাড়া, অন্য যেকোনো যোগাযোগের সূচনাও হয় অন্তর্ব্যক্তিক যোগাযোগ দিয়ে। তাই একে সাধারণ, মৌলিক এবং প্রাথমিক যোগাযোগ-ও বলা হয়ে থাকে।
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ – Interpersonal Communication
দুজন ব্যক্তির মাঝে সরাসরি যে যোগাযোগ সংগঠিত হয়, তাই আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ। এটি মানবীয় যোগাযোগের অন্যতম কার্যকর এবং ব্যবহৃত পদ্ধতি।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ জোসেফ এ. ডেভিটো-র মতে, “আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ হচ্ছে পরস্পর নির্ভরশীল দুইজন, কখনো আবার দুইয়ের অধিক, মানুষের মধ্যে বাচনিক এবং অবাচনিক মিথস্ক্রিয়া।”6উদ্ধৃতি: “Interpersonal communication is the verbal and nonverbal interaction between two or sometimes more than two, interdependent people.”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুইজন ব্যক্তির মধ্যে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ হলেও পরিস্থিতিভেদে দুইয়ের অধিক কিংবা ছোট দলের মাঝেও এধরণের যোগাযোগ হতে পারে। শ্রেণীকক্ষে ছাত্র-শিক্ষকের পাঠদানের যে সম্পর্ক, তাও আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ।
সাধারণত, পরিবার, পরিচিতজন, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মীদের মাঝে পারস্পারিক নির্ভরশীলতা এবং ঘনিষ্ঠতা থেকে এধরণের যোগাযোগ গড়ে ওঠে। আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগে প্রেরক এবং গ্রাহক সরাসরি বা মুখোমুখি পারস্পারিক অংশগ্রহণমূলক যোগাযোগে লিপ্ত হয় বিধায় তা ফলপ্রসূ হওয়ার সম্ভাবনা অধিকতর।
দলীয় যোগাযোগ – Group Communication
তিন বা ততোধিক ব্যক্তির মাঝে যখন যোগাযোগের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তাকে দলীয় বা দলগত যোগাযোগ বলা হয়।
আদিমকালে মানুষ যখন শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো, তখন থেকেই আত্মরক্ষার্থে তারা দলবদ্ধ হয়ে চলাফেরা করতো। আজ অবধি মানুষ দলবদ্ধভাবেই কাজকর্ম করে। “যোগাযোগ হচ্ছে সেই জীবনীশক্তি, যা দলগুলোর শিরায় শিরায় প্রবাহিত হয়।”7উদ্ধৃতি: “Communication is the lifeblood that flows through the veins of groups.”; গ্রন্থ: The Naturalistic Paradigm: Studying Small Groups in the Postmodern Era; লেখক: Lawrence Frey; প্রকাশনী: Sage; প্রকাশকাল: ১৯৯৯; যোগাযোগই দল গঠন এবং সক্রিয় রাখার অনবদ্য কারিগর।
দলীয় যোগাযোগে কমপক্ষে তিনজন ব্যক্তির অংশগ্রহণ থাকে। দলের সদস্য সংখ্যা ১২ জন, মতান্তরে ১৫ জন, বা তার কম হলে সেই দলকে ছোট দল (Small Group) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর চেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্যের দলকে বলা হয় বড় দল (Large Group)।
বিভিন্ন ক্লাব, সমিতিগুলোই সাধারণার্থে দল আর এসব দলের সদস্যদের যে মিটিং, সভা হয়, সেসবই দলীয় যোগাযোগ। দলের সদস্যরা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে পারস্পারিক আলোচনা, সহায়তা, সহানুভূতির মাধ্যমে দলীয় যোগাযোগ করে থাকেন।
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ এবং দলীয় যোগাযোগ – উভয় ক্ষেত্রেই তিনজন বা তার অধিক সদস্য থাকতে পারে। সদস্য সংখ্যা নয়, যোগাযোগের এই দুই ধরণের মূল পার্থক্য নির্ধারক হচ্ছে ঘনিষ্ঠতা বা সম্পর্কের গভীরতা।
আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে খুব ঘনিষ্ঠ বা গভীর সম্পর্ক থাকে, যেখানে তারা ব্যক্তিগত আলোচনা-জিজ্ঞাসাও স্বাচ্ছন্দ্যে করতে পারে। পক্ষান্তরে, দলীয় যোগাযোগে ব্যক্তিগত সম্পর্কের চেয়ে সদস্যদের সার্বিক সম্পর্ক মুখ্য বিষয়। নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌছার জন্যই তারা যোগাযোগ করে, ব্যক্তিগত আলোচনা-জিজ্ঞাসার স্থান সেখানে হয় না।
আমাদের প্রত্যেকেরই বন্ধুবান্ধব আছে। বহু বন্ধুর মাঝে হাতেগোনা দুয়েকজন আমাদের ঘনিষ্ঠ হয় – যাদের সাথে আমরা সব কথাই বলি। তাদের কিছু বলতে আমরা সংকোচ বোধ করি না। এধরণের সৌহার্দপূর্ণ বন্ধুত্বের সম্পর্কে যে যোগাযোগ হয়, তা-ই আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ।
আবার আমাদের অন্যান্য বন্ধুদের সাথেও আমরা কথা বলি, ঘুরতে যাই, ক্লাস করি। তাদের আমরা আমাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো বলি না। কোথায় ঘুরতে যাবে, ক্লাসে কি হয়েছে – এসব আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকি। এধরণের যোগাযোগ হচ্ছে দলীয় যোগাযোগ।
প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ – Organizational Communication
প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সদস্যদের মাঝে প্রাতিষ্ঠানিক বা সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে যে ধরণের যোগাযোগ গড়ে ওঠে, তা-ই প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ। এধরণের যোগাযোগ বেশ আনুষ্ঠানিক এবং নিয়মমাফিক।
যোগাযোগবিদ জোসেফ এ. ডেভিটো-র মতে, “সাংগঠনিক যোগাযোগ বলতে বুঝায়, প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক দলগুলোর মাঝে আদান-প্রদানকৃত বার্তা।”8উদ্ধৃতি: “Organizational communication refers to the message sent and received within the organization’s formal and informal groups”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
কাজের সুবিধার্থে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে প্রচারণা, বিক্রয়, প্রশাসন প্রভৃতি বিভাগ থাকে। এসব বিভাগ নির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করে। বিভাগীয় এবং আন্তঃবিভাগীয় সহকর্মীদের মধ্যে নির্ভরশীলতার কারণে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কিছু দলও গড়ে ওঠে।
এসব দল ও বিভাগ সমন্নিতভাবে প্রতিষ্ঠানের নীতি, নির্দেশনা এবং স্বার্থে কাজ করে, প্রয়োজনে পারস্পারিক যোগাযোগ করে। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় তৈরি হয় যোগাযোগের জটিল সম্পর্কজাল (Network) বা প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ। সামাজিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সহ যেকোনো ধরণের প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে এধরণের যোগাযোগ সংগঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ভিসি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রক্টর, সহকারী প্রক্টরদের সাথে যোগাযোগ রাখেন। প্রক্টরগণ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ছাত্র-শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। আবার শিক্ষকবৃন্দ এবং ছাত্ররা তাদের অভিযোগ নিয়ে প্রক্টরের সাথে যোগাযোগ করেন। ভিসির সাথে যোগাযোগ, পরামর্শক্রমে প্রক্টরগণ সেসব সমস্যা সমাধান করেন।
এভাবেই আন্তঃযোগাযোগের ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়। কিন্তু আন্তঃব্যক্তিক এবং দলীয় যোগাযোগের মত অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের পছন্দানুযায়ী যোগাযোগের বিষয় নির্বাচন করে না। প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিষয়াবলী নিয়েই প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ সংগঠিত হয়।
জনযোগাযোগ – Public communication
জনসভা, সমাবেশ, কর্মশালা ইত্যাদিকে জনযোগাযোগ বলা যেতে পারে, যেখানে একজন বক্তা জনসমাগমের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ জোসেফ এ ডেভিটো-র ভাষ্যমতে, “জনযোগাযোগকে যোগাযোগের সেই রূপ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে, যাতে একজন বক্তা অপেক্ষাকৃত বেশি সংখ্যক শ্রোতার উদ্দেশ্য দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়ে থাকেন, সাধারণত সেসব শ্রোতা বক্তার সামনেই অবস্থান করেন।”9উদ্ধৃতি: “Public communication is may be defined as that form of communication in which a speaker addresses a relatively large audience with a relatively continuous discourse, usually in a face-to-face situation.”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
সাধারণত, জনযোগাযোগের জন্য উন্মুক্ত স্থান বা জনসমাগমের স্থলে পরিকল্পিত আয়োজন করা হয়, আলোচ্যসূচি এবং আলোচক বা বক্তা পূর্বনির্ধারিত থাকে। তারপর বক্তা নির্ধারিত বিষয়ে জনমানুষের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়ে থাকেন।
জনযোগাযোগ অনেকটা একমুখী যোগাযোগ – শ্রোতাদের বার্তা দেয়া বা বলার তেমন সুযোগ থাকে না। তাই, এই যোগাযোগে সকলের অংশগ্রহণ থাকলেও মুখ্য ভূমিকায় থাকেন প্রেরক বা বক্তা।
রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী প্রচারণায় এধরণের যোগাযোগের ব্যাপক প্রয়োগ ঘটে। বক্তা বার্তা বা বক্তৃতা আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারলে গ্রাহক বা শ্রোতারা যোগাযোগে সংযুক্ত থাকে। অন্যথায়, এধরণের যোগাযোগ ব্যর্থ হয়।
গণযোগাযোগ – Mass Communication
গণমাধ্যম দ্বারা যেই যোগাযোগ সংগঠিত হয়, তাই গণযোগাযোগ। অর্থাৎ, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও, বই, সিনেমা ইত্যাদির মত গণমাধ্যমগুলোতে গনমানুষের উদ্দেশ্যে যেসব বার্তা প্রচার করা হয়, সেটাই গণযোগাযোগ।
আমরা যখন পত্রিকা পড়ি, টেলিভিশন দেখি, রেডিও শুনি কিংবা বই পড়ি, সিনেমা দেখি, গান শুনি – তখন এসবের যারা লেখক, উপস্থাপক, শিল্পী তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ ঘটে। সংবাদ, অনুষ্ঠান, বই, সিনেমা, গান এগুলো হয়ে যায় যোগাযোগের মাধ্যম আর এসবের ভিতরের খবর, গল্প, কাহিনি রূপ নেয় বার্তায়।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ের অধ্যাপক জোসেফ ডোমিনিক এ সম্পর্কে লিখেছেন, “গণযোগাযোগ বলতে সেই প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যার মাধ্যমে একটি বৃহৎ সংস্থা বেশ কিছু যন্ত্রের সাহায্যে উন্মুক্ত বার্তা উৎপাদন প্রচার করে এবং বৃহৎ, বিচিত্র এবং বিক্ষিপ্ত দর্শকদের কাছে সেগুলো প্রচার করে।”10উদ্ধৃতি: “Mass Communication refers to the process by which a complex organization with the aid of one or more machines produces and transmits public message that are directed at large, heterogeneous and scattered audiences.”; গ্রন্থ: The Dynamics of Mass Communication; লেখক: Joseph R. Dominick; প্রকাশকাল: ১৯৯৪;
গণযোগাযোগ প্রায় সম্পূর্ণরূপেই একমুখী যোগাযোগ। এখানে বার্তার গ্রাহক তথা পাঠক, দর্শক এবং শ্রোতারা যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে না।
গণযোগাযোগ বেশ জটিল একটি বিষয়। পাঠক, দর্শক এবং শ্রোতাদের প্রত্যেকের অবস্থান, বাসস্থান, চিন্তা, ধর্ম সহ প্রতিটি বিষয় ভিন্ন এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ। বিশাল এই গনমানুষের সার্বিক ভিন্নতা বা বৈচিত্র্য বিবেচনায় রেখেই বার্তা সাজাতে এবং উপস্থাপন করতে হয়।
প্রযুক্তির কল্যাণে আজকাল ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও গণযোগাযোগ হচ্ছে। নিজেদের মতামত ব্যক্ত করার সুযোগ থাকে বলে প্রথাগত গণযোগাযোগ মাধ্যমগুলোর চেয়ে ইন্টারনেটভিত্তিক গণযোগাযোগ মাধ্যমগুলো বর্তমানে অধিক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
উন্নয়ন যোগাযোগ – Development Communication
তৃণমূলের মানুষজনের কাছে প্রয়োজন, প্রভাবন এবং প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে তথ্য পৌছে দেয়া এবং উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত মাধ্যমে যোগাযোগ করাই উন্নয়ন যোগাযোগ।
উন্নয়ন যোগাযোগের জননী হিসেবে স্বীকৃত অধ্যাপক ড. নোরা ক্রুজ কুইব্রাল লিখেছেন, উন্নয়ন যোগাযোগ হচ্ছে “মানবীয় যোগাযোগের শিল্প ও বিজ্ঞান, যা পরিকল্পিত পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি দেশকে দরিদ্রাবস্থা থেকে গতিশীল আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধির অবস্থানে নিয়ে আসে। ফলশ্রুতিতে বৃহত্তর সমতা সৃষ্টি সম্ভবপর হয়, গনমানুষের ব্যক্তিগত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়।”11উদ্ধৃতি: “the art and science of human communication linked to a society’s planned transformation from a state of poverty to one dynamic socio-economic growth that makes for greater equality and the larger unfolding of individual potentials.”; প্রবন্ধ: Development Communication in a Borderless World; লেখক: Dr. Nora Cruz Quebral; প্রকাশকাল: ২০০১;
এক সময় মফস্বল বা গ্রামাঞ্চলে নারীশিক্ষার প্রচলন ছিল না বললেই চলে। সামাজিক কুসংস্কার, প্রথার দোহায় দিয়ে সেখানকার মানুষজন নারীশিক্ষার বিরোধীতা করতো নাহয় অবহেলা করে নারীদের শিক্ষা বঞ্চিত রাখা হতো।
সমাজের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক এই নারীদের অশিক্ষিত রেখে সামাজিক বাজাতীয় উন্নয়ন অসম্ভব। তাই সরকার, সামাজিক সংগঠন, এনজিওগুলো প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সেখানকার মানুষদের মাঝে নারীশিক্ষা সম্পর্কে প্রচারণা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের কর্মদক্ষ এবং সাবলম্বী হতে সহায়তা করে।
এসবের ফলেই এখন গ্রামের নারীরাও উদোক্তা হয়ে উঠছে, নিজেদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতির সমৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখছে। যোগাযোগের এই ধারাটিই উন্নয়ন যোগাযোগ।
ব্যবসায় যোগাযোগ – Business Communication
ব্যবসায় পরিচালনার জন্য উৎপাদন, বণ্টন, বিক্রয়, প্রচারণা এবং এসবের সহায়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে তথ্য, পরিকল্পনা, চিন্তা-ভাবনার আদান-প্রদানই ব্যবসায় যোগাযোগ। এক কথায়, ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে এবং ব্যব্যসায় পরিচালনা সংক্রান্ত যে যোগাযোগ, তা-ই ব্যব্যসায় যোগাযোগ।
অধ্যাপক ব্রেনান লরেন্স-র মতে, “ব্যবসায় যোগাযোগ হলো বাণিজ্য এবং শিল্পে উপস্থাপন, সঞ্চালন, গ্রহণ এবং ধারণার পারস্পারিক আদান-প্রদান।”12উদ্ধৃতি: “Business communication is the expression, channeling, receiving, and Interchanging of ideas in commerce and industries.”; গ্রন্থ: Business Communication; লেখক: Brennan David Lawrence;
ব্যবসায়িক সাফল্য প্রায় সর্বাংশেই যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল। যথাযথ প্রচারণা ও সংযোগের মাধ্যমে ক্রেতাদের সাথে দৃঢ় যোগাযোগের সম্পর্ক তৈরি হলে ব্যবসায়িক সাফল্য অবশ্যম্ভাবী। অপরদিকে, যথোপযুক্ত যোগাযোগের অভাবে দূরত্ব সৃষ্টি হলে ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
ব্যবসায় পরিচালনার জন্যও যোগাযোগ দক্ষতার প্রয়োজন হয়। কর্মী, সহকর্মী, অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হয়। ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট এমন বহুমুখী যোগাযোগ নিয়েই মূলত ব্যব্যসায় যোগাযোগ।
বস্তুত, যোগাযোগের পরিধি অসীম। দৈনন্দিন জীবনের সর্বব্যাপী যোগাযোগের অস্তিত্ব বিদ্যমান। সময়ে-অসময়ে যোগাযোগের প্রেক্ষাপট বদলে যায়, বদলে যায় যোগাযোগের পদ্ধতি। প্রেক্ষাপট বুঝে যথাযথ পদ্ধতিতে যোগাযোগ করতে পারলেই যোগাযোগ কার্যকরী বা ফলপ্রসূ হয়।
তথ্যসূত্র - References
- 1উদ্ধৃতি: “We use the word ‘communication’ sometimes to refer to what is so transferred, sometimes to the means by which it is transferred, sometimes to the whole process.”; প্রবন্ধ: What is Communication?; লেখক: Alfred Jules Freddie Ayer;
- 2উদ্ধৃতি: “The medium is the message”; গ্রন্থ: Understanding Media: The Extensions of Man; লেখক: Marshall McLuhan; প্রকাশনী: McGraw-Hill; প্রকাশকাল: ১৯৬৪;
- 3উদ্ধৃতি: “Non-verbal communication is the message that are communicated by body posture, eye movements, facial expression, gesture, use of space, vocal volume and rate, and even silence.”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
- 4প্রবন্ধ: How Much of Communication Is Nonverbal?; প্রকাশনী: University of Texas;
- 5উদ্ধৃতি: “To all of us, communication is a natural, necessary, omnipresent activity. We enter into communication relationships because we want to relate to environment, especially the human environment, around us.”; গ্রন্থ: Men, Women, Messages, and Media : Understanding Human Communication; লেখক: Wilbur Schramm; প্রকাশনী: Harper & Row; প্রকাশকাল: ১৯৮২;
- 6উদ্ধৃতি: “Interpersonal communication is the verbal and nonverbal interaction between two or sometimes more than two, interdependent people.”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
- 7উদ্ধৃতি: “Communication is the lifeblood that flows through the veins of groups.”; গ্রন্থ: The Naturalistic Paradigm: Studying Small Groups in the Postmodern Era; লেখক: Lawrence Frey; প্রকাশনী: Sage; প্রকাশকাল: ১৯৯৯;
- 8উদ্ধৃতি: “Organizational communication refers to the message sent and received within the organization’s formal and informal groups”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
- 9উদ্ধৃতি: “Public communication is may be defined as that form of communication in which a speaker addresses a relatively large audience with a relatively continuous discourse, usually in a face-to-face situation.”; গ্রন্থ: Human Communication: The Basic Course; লেখক: Joseph A. Devito; প্রকাশনী: Pearson Publication;
- 10উদ্ধৃতি: “Mass Communication refers to the process by which a complex organization with the aid of one or more machines produces and transmits public message that are directed at large, heterogeneous and scattered audiences.”; গ্রন্থ: The Dynamics of Mass Communication; লেখক: Joseph R. Dominick; প্রকাশকাল: ১৯৯৪;
- 11উদ্ধৃতি: “the art and science of human communication linked to a society’s planned transformation from a state of poverty to one dynamic socio-economic growth that makes for greater equality and the larger unfolding of individual potentials.”; প্রবন্ধ: Development Communication in a Borderless World; লেখক: Dr. Nora Cruz Quebral; প্রকাশকাল: ২০০১;
- 12উদ্ধৃতি: “Business communication is the expression, channeling, receiving, and Interchanging of ideas in commerce and industries.”; গ্রন্থ: Business Communication; লেখক: Brennan David Lawrence;