আধেয় বিশ্লেষণ বা Content Analysis হচ্ছে বক্তৃতা, সাক্ষাৎকার, চিঠি, নথি, সংবাদ, গ্রন্থ, গান, চিত্র, চলচ্চিত্র ইত্যাদি যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে কেন্দ্র করে সংখ্যাত্মক গবেষণা পদ্ধতি।
১৭৪৩ সালে সুইডেনে খ্রিস্টানদের মোভারিয়ান সম্প্রদায় ‘The Songs of Zion’ শিরোনামে প্রায় ৯০-টি ধর্মীয় গীত প্রচার করে। পরবর্তীতে ১৭৭৮ সালে তারা ‘New Songs of Zion’ শিরোনামে আরও কিছু ধর্মীয় গীতের সংকলন প্রকাশ করে। এসব ছিল সেখানকার লুথেরান খ্রিস্টানদের প্রচলিত বিশ্বাস, আচার-আচরণ বিশ্লেষণ পূর্বক সংস্কারের লক্ষ্যে প্রচারিত ধর্মীয় সঙ্গীত।
মোভারিয়ানদের এই কর্মকাণ্ডকেই প্রথম আধেয় বিশ্লেষণ বা Content Analysis বলে ধারণা করা হয়। শেক্সপিয়রের ১৮৯৩ সালে রচিত কিছু সাহিত্যেও এই পদ্ধতির নিদর্শন পাওয়া যায়।1 নিবন্ধ: Content Analysis; প্রকাশনী: উইকিপিডিয়া;
বিংশ শতাব্দীতে গণমাধ্যম গবেষণায় আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন গণমাধ্যমে প্রচারিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক প্রোপাগান্ডা নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হ্যারল্ড ল্যাসওয়েল আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতি বেঁছে নেন, যা ছিল গণমাধ্যম গবেষণায় এই পদ্ধতি ব্যবহারের সূচনা।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রথাগত গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গবেষণার ক্ষেত্রেও আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির ফলপ্রসূ প্রয়োগ হচ্ছে। ব্যবহারকারীদের আচার-আচরণ এবং তাদের ওপর সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর প্রভাব সম্পর্কিত বিপুল তথ্য নিয়ে গবেষণায় এই পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয়।
আধেয় বিশ্লেষণের সূত্র হিসেবে ল্যাসওয়েল “কে কি বলে, কাকে, কেন, কি পরিমাণে এবং তার প্রভাব কি?” এই প্রশ্নমূলক বাক্যটি উপস্থাপন করেন।2 নিবন্ধ: The Structure and Function of Communication in Society; লেখক: Harold Lasswell; উদ্ধৃতি: “Who says what, to whom, why, to what extent and with what effect?”
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতিকে বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিও বলা হয়। গবেষণার অন্যান্য পদ্ধতির মত এতেও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় কলা-কৌশল ও নিয়ম যথারীতি অনুসরণ করা হয়। বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে মূলত গুণাত্মক তথ্যকে সংকেতায়নের মাধ্যমে সংখ্যাগত তথ্যে রূপান্তরিত করা হয়।
আধেয় বিশ্লেষণ – Content Analysis
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতি প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাত্মক (Quantitative) গবেষণা পদ্ধতির একটি ধারা। বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, ব্যবসায় সহ সবক্ষেত্রেই এই পদ্ধতির প্রায়োগিকতা রয়েছে। তবে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রায় সকলেই বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ বা আধেয় বিশ্লেষণকে অভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির পথিকৃৎ বিশিষ্ট গবেষক ফ্রেড এন. কারলিঙ্গার লিখেছেন, “বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ হচ্ছে চলক বা তথ্য পরিমাপের লক্ষ্যে একটি পদ্ধতিগত, উদ্দেশ্যগত এবং সংখ্যাগত পদ্ধতিতে যোগাযোগ অধ্যয়ন এবং বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি।”3 গ্রন্থ: Foundation of Behavioral Research; লেখক: Fred N. Kerlinger; উদ্ধৃতি: “Content analysis is a method of studying and analyzing communication in a systematic, objective and quantitative manner for the purpose of measuring variables.”
এই পদ্ধতির অন্যতম পথিকৃৎ বার্নার্ড বেরেলসন বলেছেন, আধেয় বিশ্লেষণ হচ্ছে “যোগাযোগের প্রকাশ্য বিষয়বস্তুর উদ্দেশ্যগত, পদ্ধতিগত এবং পরিমাণগত বিবরণ গবেষণার কৌশল।”4 গ্রন্থ: Content Analysis in Communication Research; লেখক: Bernard Berelson; : “a research technique for the objective, systematic and quantitative description of the manifest content of communication”
ওয়ালাইজার এবং ওয়েইনার এর ভাষ্যমতে, আধেয় বিশ্লেষণ হচ্ছে “সংরক্ষিত তথ্যের বিষয়বস্তু পরীক্ষণের জন্য নিয়মানুগ পদ্ধতি।”5 গ্রন্থ: Research Methods and Analysis: Searching for Relationships; লেখক: M.H. Walizer, P.L. Weiner; উদ্ধৃতি: “Any Systematic procedure devised to examine the content of recorded information”
ক্লাউস ক্রিপেনডর্ফ-র মতে, বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ হচ্ছে “প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তিতে তথ্যের উপস্থাপন যোগ্য এবং যথাযথ তথ্যসূত্র তৈরির একটি গবেষণা কৌশল।”6 গ্রন্থ: Content Analysis: An Introduction to Its Methodology; লেখক: Klaus Krippendorff; প্রকাশনী: Sage Publication; প্রকাশকাল: ১৯৮০; উদ্ধৃতি: “A research technique for making replicable and valid references from data to their context.”
আর্ল ব্যাবি লিখেছেন, “বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ হলো মানবীয় যোগাযোগের প্রামাণ্য অধ্যয়ন। অধ্যয়নের উপযোগী যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর মাঝে রয়েছে বই, পত্রিকা, ওয়েব পেজ, কবিতা, সংবাদপত্র, গান, চিত্রকর্ম, বক্তৃতা, চিঠি, ই-মেইল, আইন এবং সংবিধান, সেইসাথে এসবের যেকোনো উপাদান বা সংকলন।”7 গ্রন্থ: The Practice of Social Research; লেখক: Earl R. Babbie; প্রকাশকাল: ২০০১; উদ্ধৃতি: “Content analysis is the study of recorded human communications. Among the forms suitable for study are books, magazines, Web pages, poems, newspapers, songs, paintings, speeches, letters, email messages, laws, and constitutions, as well as any components or collections thereof.”
উল্লেখ্য, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও-র মত বই, গান, চলচ্চিত্র ইত্যাদিও গণমাধ্যমের অন্তর্ভুক্ত। গণমাধ্যম গবেষণায় আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে সাধারণত গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ, বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য বিষয়াবলী, এসব কি ও কাদের উদ্দেশ্যে এবং কিভাবে ও কতবার প্রচারিত হচ্ছে, সেসব অধ্যয়ন করা হয়ে থাকে।
আধেয় বিশ্লেষণের বৈশিষ্ট্য – Features of Content Analysis
ফ্রেড এন. কারলিঙ্গারের উপরিউক্ত সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করে রজার উইমার এবং জোসেফ ডোমিনিক তাঁদের “Mass Media Research: An Introduction” গ্রন্থে আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির তিনটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন।8 গ্রন্থ: Mass Media Research: An Introduction; লেখক: Roger D. Wimmer, Joseph R. Dominick; সেগুলো হচ্ছে –
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতি-নির্ভর – Content Analysis is Systematic
আধেয় বিশ্লেষণ মূলত পদ্ধতি-নির্ভর গবেষণা। অর্থাৎ, এই পদ্ধতিতে যেসব বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করা হবে, সেগুলো অবশ্যই সুস্পষ্ট এবং ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত এবং বিশ্লেষিত হবে।
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে নমুনা নির্বাচনে অবশ্যই যথোপযুক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে, যাতে প্রতিটি নমুনা বা উপাদানকেই বিশ্লেষণের সুযোগ থাকে। বিশ্লেষণ বা মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও হবে পদ্ধতি নির্ভর।
অধিকন্তু, বিবেচনাধীন সকল নমুনা এবং বিশ্লেষণ সহ সমগ্র অধ্যয়ন জুড়ে কেবল নির্দিষ্ট একটি পদ্ধতিই অনুসরণ করতে হবে। একটি গবেষণায় একাধিক বা বিকল্প পদ্ধতির ব্যবহার হলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।
আধেয় বিশ্লেষণ বস্তুনিষ্ঠ – Content Analysis is Objective
আধেয় বিশ্লেষণের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা পদ্ধতি। অর্থাৎ, এই পদ্ধতিতে গবেষণায়, বিশেষত মূল্যায়নের ক্ষেত্রে গবেষকের নিজস্ব মতাদর্শ এবং প্রভাব বিন্দুমাত্র যুক্ত করা যাবে না।
সমগ্র গবেষণায় বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে হবে, মূল্যায়ন হবে – নিরপেক্ষ, নির্লিপ্ত এবং নীতিনিষ্ঠ। একই বিষয়ে অন্যান্য গবেষকগণ গবেষণা করলেও, গবেষণার ফলাফল যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। অধ্যয়নের প্রায়োগিক কার্যকারিতা এবং চলক বা তথ্যের শ্রেণীকরণও সুস্পষ্ট এবং বিস্তারিত হওয়া উচিত, যাতে অন্যান্য গবেষকবৃন্দ প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করে একই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে।
নমুনা ও শ্রেণীকরণ প্রক্রিয়াকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে, এমন একটি সুস্পষ্ট মানদন্ড এবং পদ্ধতি নির্ধারণ করা না হলে গবেষণাটি বস্তুনিষ্ঠ হয় না। সেক্ষেত্রে, গবেষণার ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
আধেয় বিশ্লেষণ সংখ্যাত্মক – Content Analysis is Quantitative
আধেয় বিশ্লেষণের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি সংখ্যা বা পরিমাণবাচক গবেষণা পদ্ধতি। আধেয় বিশ্লেষণের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন বার্তার নিহিতার্থ বা বিষয়বস্তুর যথাযথ উপস্থাপন। এক্ষেত্রে, সংখ্যা বা পরিমাণ গবেষকদের নির্ভুল গবেষণায় সহায়তা করে।
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে ‘অধিকাংশ, বেশির ভাগ, সংখ্যাগরিষ্ঠ’ ইত্যাদি শব্দের পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বা পরিসংখ্যান উল্লেখ করতে হবে। যেমন: ২০২২ সালের জনশুমারির প্রতিবেদন অনুসারে বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যায় পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি। আধেয় বিশ্লেষণে এই তথ্যটি সুস্পষ্ট করতে বলতে হবে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৫০% নারী, যেখানে পুরুষ প্রায় ৪৯%।
সংখ্যা বা পরিমাণ একদিকে যেমন তথ্যকে সুস্পষ্ট করে, অপরদিকে গবেষকদের বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন সহজতর করে। তাছাড়া, গবেষণায় বিভিন্ন সফটওয়্যার, প্রোগ্রাম এবং গ্রাফ ব্যবহারেও সহায়তা করে।
আধেয় বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য – Purposes of Content Analysis
গনমানুষের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন গণমাধ্যম, গণযোগাযোগ, সমাজ, রাষ্ট্র ইত্যাদি গবেষণায় প্রধানত আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির প্রয়োগ হয়ে থাকে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় রেখে পরিচালিত হয় বলে এধরণের গবেষণার কিছু উদ্দেশ্য থাকে।
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির পথিকৃৎ বার্নার্ড বেরেলসন বিষয়বস্তুর বৈশিষ্ট্য, কার্যকারণ ও প্রভাব বিশ্লেষণ করে ৩-টি ধারায় ১৫-টি উদ্দেশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন।9 নিবন্ধ: Content Analysis: A Method in Social Science Research; লেখক: B Devi Prasad; যথা –
বিষয়বস্তুর বৈশিষ্ট্য বর্ণনামূলক উদ্দেশ্য
- যোগাযোগের বিষয়বস্তুর প্রবণতা চিহ্নিত করা;
- প্রকাশিত বার্তার সাথে উৎস বা প্রচারকের অভিপ্রায় সংযুক্ত করা;
- বিষয়বস্তুর মান নির্ণয় করা;
- বিষয়বস্তুর প্রভাবনের কৌশল বিশ্লেষণ করা;
- বিষয়বস্তুর ধরণ বা রচনা কৌশল বিশ্লেষণ করা;
- দর্শক-শ্রোতাদের নিত্যনৈমিত্তিক বৈশিষ্ট্যর সাথে তাদের উদ্দেশ্যে প্রচারিত বার্তাগুলোকে সম্পর্কযুক্ত করা;
- যোগাযোগের বিষয়বস্তুর ধারা চিহ্নিত করা;
বিষয়বস্তুর কার্যকারণ সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্য
- রাজনৈতিক ও সামরিক গোয়েন্দা তথ্য সুরক্ষিত করা;
- সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মনস্তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করা;
- সংস্কৃতি এবং সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ধারা অনুমান করা;
- আইনি প্রমাণের উপযোগ সৃষ্টি করা;
- অধিকার বা মালিকানা সংক্রান্ত বিতর্কের সমাধান দেয়া;
বিষয়বস্তুর প্রভাব সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্য
- পঠনযোগ্যতা বা গ্রহণযোগ্যতা পরিমাপ করা;
- বিষয়বস্তুর তথ্য প্রবাহ বিশ্লেষণ করা;
- যোগাযোগের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা;
আধেয় বিশ্লেষণের ধাপসমূহ – Steps in Content Analysis
গণমাধ্যমের আধেয় বিশ্লেষণে যথাযথ নকশা প্রণয়ন করে নির্দিষ্ট ধাপ অতিক্রম করার মধ্য দিয়ে প্রত্যাশিত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা হয়। রজার উইমার এবং জোসেফ ডোমিনিক আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতির মোট ১০-টি ধাপের উল্লেখ করেছেন।10 গ্রন্থ: Mass Media Research: An Introduction; লেখক: Roger D. Wimmer, Joseph R. Dominick; সেগুলো হচ্ছে –
গবেষণার প্রশ্নপত্র তৈরি বা পূর্বানুমান – Formulate the Research Question or Hypothesis
আধেয় বিশ্লেষণের প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে গবেষণার লক্ষ্যে যথাযথ প্রশ্নপত্র তৈরি করা। এক্ষেত্রে পূর্বানুমানের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
গণমাধ্যমে প্রতিদিন হাজারো সংবাদ, বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। এসব সংবাদ ও বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু, ধরণও ভিন্ন ভিন্ন হয়। এত বিপুল সংখ্যক সংবাদ বা বিজ্ঞাপন নিয়ে একক প্রচেষ্টায় মানসম্মত গবেষণা সম্ভব নয়।
তাই গবেষণার শুরুতেই অনুমানের ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র নির্ধারণ এবং সেই আলোকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সুনির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র ছাড়া লক্ষ্যহীন বা এলোমেলোভাবে তথ্য সংগ্রহ করলে বিষয়বস্তুর যথার্থ বিশ্লেষণ সম্ভব নয়।
গবেষণার সমগ্রক নির্ধারণ – Define the Population in Question
এই পর্যায়ে প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে গবেষণার সমগ্রক বা বিষয়বস্তু সুনির্দিষ্ট করতে হবে। অর্থাৎ, গবেষণার সমগ্রকের সীমারেখা যেমন বিষয়বস্তুর ধরণ, মাধ্যম, সময়কাল ইত্যাদি চিহ্নিত করতে হবে।
একজন গবেষক যদি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে গবেষণা করতে চান, সেক্ষেত্রে তাকে নির্ধারণ করতে হবে যে তিনি যুদ্ধের রাজনৈতিক নাকি অর্থনৈতিক দিক নিয়ে গবেষণা করবেন। আবার এই যুদ্ধের শুরুটা হয়েছিল ২০১৪ সালে রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখলের মাধ্যমে। সাম্প্রতিক যুদ্ধ তার ধারাবাহিকতা। তাই এই বিষয়ে গবেষণা করতে হলে ২০১৪ সাল থেকে শুরু করতে হবে।
আবার একজন গবেষক গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রসাধনী পণ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী হন, তাকে নির্ধারণ করতে কোন কোন পণ্য নিয়ে তিনি গবেষণা করতে চান এবং সংবাদপত্র, টেলিভিশন নাকি রেডিও অর্থাৎ কোন ধরণের গণমাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞাপন নিয়ে তিনি গবেষণা করবেন।
সমগ্রক থেকে যথাযথ নমুনা নির্বাচন – Select an Appropriate Sample from the Population
সমগ্রক নির্ধারণের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে নমুনা নির্বাচন। এক্ষেত্রে, যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিষয়বস্তুর জন্য প্রত্যাশিত তথ্য-উপাত্ত নমুনা হিসেবে নির্বাচন করতে হবে।
গবেষক যেই বিষয় বা আধেয় নিয়ে অধ্যয়ন করতে আগ্রহী, গবেষণার প্রশ্নপত্র এবং সমগ্রকের ভিত্তিতে সেগুলোর একটি কাঠামো তৈরি করে নমুনায়ন প্রক্রিয়ায় উপযুক্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনায়ন সাধারণত দুই ভাবে হয়ে থাকে।
প্রথমত, বিষয়বস্তুর উৎস নির্ধারণ করার মাধ্যমে নমুনায়ন। যেমন – গবেষক টেলিভিশনে প্রসাধনী পণ্যের বিজ্ঞাপন নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী হলে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সেসব পণ্যের বহুল আলোচিত কিছু বিজ্ঞাপন নির্বাচন করবেন।
দ্বিতীয়ত, সময়কাল নির্ধারণের মাধ্যমে নমুনায়ন। যেমন – গবেষক সংবাদপত্রে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে বর্তমান বিশ্ববাজারে অস্থিরতা সম্পর্কিত সংবাদগুলো নিয়ে গবেষণা করলে তাকে সেসব সংবাদ-রূপী নমুনাগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বিশ্লেষণের একক নির্ধারণ ও ব্যাখ্যা – Select and Define a Unit of Analysis
বিষয়বস্তু নির্বাচনের ক্ষুদ্রতম উপাদান হচ্ছে একক বিশ্লেষণ। নমুনা নির্বাচনের পর সেগুলো বিশ্লেষণের একক নির্ধারণ করতে হবে।
অর্থাৎ, নমুনাগুলো কিভাবে বা কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা হবে, তা নির্ধারণ করতে হবে। পরবর্তীতে, বিশ্লেষণের নির্ধারিত এককের আলোকে বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করতে হবে।
যেমন – প্রসাধনী পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলো টেলিভিশনে কত ঘন ঘন প্রচার করা হয়েছে, কত বার প্রচার হয়েছে, কত সময় যাবত প্রচারিত হয়েছে। এগুলো বিশ্লেষণের একক। আবার, সংবাদ বা জনপ্রিয় অনুষ্ঠান, যা ব্যাপক সংখ্যক দর্শক দেখে, সেই সময়ে বিজ্ঞাপনগুলো প্রচারিত হয়েছে নাকি নিয়মিত ধারায় প্রচারিত হয়েছে, সেসব বিশ্লেষণ হচ্ছে বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা।
বিশ্লেষণযোগ্য বিষয়বস্তুর শ্রেণীকরণ – Consturct the Categories of Content to be Analyzed
নমুনায়ন প্রক্রিয়ায় সংগৃহীত নমুনা বা উপাত্তগুলো এই ধাপে শ্রেণিবদ্ধ করতে হবে। অর্থাৎ, এই পর্যায়ে গবেষকের দায়িত্ব হবে বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে এবং নমুনার সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে নমুনাগুলোকে শ্রেণিবদ্ধ করা।
সাধারণত এক্ষেত্রে সরল ও স্তরিত নমুনায়ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বিশ্লেষণ ছাড়া অনুমানের ভিত্তিতে দৈবচয়ন বা সাধারণভাবে নমুনা নির্বাচন করা হলে তা সরল নমুনায়ন। যেমন – সংবাদপত্রে প্রকাশিত ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বিভিন্ন সংবাদ নমুনা হিসেবে নির্বাচন করা হলে তা সরল নমুনায়ন। এক্ষেত্রে, যুদ্ধ-পূর্ব, যুদ্ধকালীন এবং যুদ্ধ-পরবর্তী ইত্যাদি ভাগে সংবাদগুলোকে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে।
পক্ষান্তরে, প্রসাধনী পণ্যের বিজ্ঞাপনগুলো নারী নাকি পুরুষ, তরুণ নাকি বয়স্ক – কাদের উদ্দেশ্যে প্রচারিত হয়েছে, এসব বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে নমুনাগুলো শ্রেণিবদ্ধ করা হলে তা স্তরিত নমুনায়ন।
পরিমাপ পদ্ধতি সুনির্দিষ্ট করা – Establish a Quantification System
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতি মূলত সংখ্যাত্মক গবেষণা পদ্ধতি বা Quantitative Research Method। আধেয় বা বিষয়বস্তুর সংখ্যা বা পরিমাপগত বিশ্লেষণই এপদ্ধতির ভিত্তি।
সাধারণত, নাম সূচক, ক্রম সূচক, ব্যাপ্তি সূচক ও অনুপাত সূচক পরিমাপের মাধ্যমে এধরণের গবেষণা হয়ে থাকে।11 নিবন্ধ: On the Theory of Scales of Measurement; লেখক: Stanley Smith Stevens; আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে গবেষণার এই পর্যায়ে প্রাপ্ত উপাত্তগুলো এসব সূচকের মাধ্যমে পরিমাপ, পৃথকীকরণ এবং বিশ্লেষণ করতে হবে। যেমন –
নাম সূচক (Nominal Scale) পরিমাপে ব্যক্তি, বস্তু, অবস্থা ইত্যাদির নামের ভিত্তিতে নমুনাগুলো শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। ক্রম সূচক (Ordinal Scale) পরিমাপে নমুনাগুলোর বৈশিষ্ট্য, মাত্রা প্রভৃতি বিষয়াবলীর পরিমাণ বেশি থেকে কম, উঁচু থেকে নিচু ইত্যাদি ক্রমের ভিত্তিতে সাজানো হয়।
ব্যাপ্তি সূচক (Interval Scale) পরিমাপে একাধিক নমুনার মাঝে তুলনামূলক সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ হয়। অনুপাত সূচক (Ratio Scale) পরিমাপে নমুনাগুলোর ব্যবধান আনুপাতিক হারে উপস্থাপন করা হয়।
আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে উপাত্তের ধরণ অনুসারে এসব সূচক ব্যবহার করে নমুনা পরিমাপ করা যায়। তবে, কোন উপাত্ত বা নমুনা বিশ্লেষণে কোন সূচক ব্যবহার সঙ্গতিপূর্ণ, তা গবেষণার এই পর্যায়ে নির্দিষ্ট করে নিতে হবে।
কোডারদের প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষামূলক গবেষণা – Train Coders & Conduct a Pilot Study
গবেষণার এই পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্ত বা নমুনা যথাযথভাবে বিশ্লেষণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কোড, প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার তৈরির লক্ষ্যে কোডার বা প্রোগ্রামারদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
গবেষণাকে গ্রহণযোগ্য বা বিশ্বাসযোগ্য করতে এই ধাপটি আবশ্যিক। এক্ষেত্রে, নমুনাগুলো কিভাবে বিশ্লেষণ করা হবে, উপাত্ত কিভাবে উপস্থাপন করা হবে, এসবের শ্রেণীকরণ কিভাবে করতে হবে – বিষয়গুলো সম্পর্কে কোডারদের ধারণা ও নির্দেশনা দেয়া হয় যাতে তারা প্রয়োজনীয় কোড বা প্রোগ্রাম তৈরি করতে পারেন।
উল্লেখ্য, কোডিং-র ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বজন স্বীকৃত পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এজন্য গবেষণা নির্দেশনা ও পদ্ধতি সম্পর্কে অভিজ্ঞ বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোডারদের নেয়াই শ্রেয়।
কোড প্রস্তুত হলে পরীক্ষামূলকভাবে তা ব্যবহারের মাধ্যমে গবেষণা করে দেখতে হবে যে সকল কিছু মানসম্মত হয়েছে কিনা।
প্রতিষ্ঠিত সংকেত অনুসারে বিষয়বস্তু সাজানো – Code the Content according to Established Definitions
কোড বা প্রোগ্রাম প্রস্তুতের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে প্রতিষ্ঠিত বা সুপরিচিত সংকেত অনুসারে বিষয়বস্তু, তথ্য-উপাত্ত, নমুনা সাজানো।
এক্ষেত্রে, গবেষণার প্রশ্নপত্র অনুসারে কোড বা প্রোগ্রামের সাহায্যে পরিসংখ্যান ও সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের জন্য সংখ্যা বা সংকেত দ্বারা উপাত্তগুলো সাজানো হয়। মূলত, আবদ্ধ (Close Ended) প্রশ্নের উত্তরগুলোকে অর্থপূর্ণ শ্রেণীকরণের লক্ষ্যেই সংকেতায়ন করা হয়ে থাকে।
অপেক্ষাকৃত বড় আকৃতির প্রশ্ন ও উত্তর, যেগুলো সারণি দ্বারা উপস্থাপন সুবিধাজনক নয়, সেগুলো বিভক্ত করেই আবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর তৈরি করা হয়। এতে উপাত্তগুলো কোডের সাহায্যে সহজেই সারিবদ্ধ করা যায়। তবে, উপাত্তের পরিমাণ কম হলে, সেগুলো সংকেতায়নের প্রয়োজন হয় না।
সংগ্রহিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ – Analyzed the Collected Data
তথ্য-উপাত্ত, নমুনা সংগ্রহ এবং সারণিবদ্ধ করার পর গবেষণার এই ধাপে সেসব বিশ্লেষণ করা হয়।
গবেষক যেই প্রশ্নপত্র বা অনুমানের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন, এই পর্যায়ে তিনি তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং বিশ্লেষণ প্রদান করেন। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যগুলো বিদ্যমান কোনো তথ্যের সাথে অসংগতিপূর্ণ হলে এর কারণ ব্যাখ্যা করেন।
বিশ্লেষণের সময় গবেষণার প্রশ্নপত্রের আলোকে বিষয়বস্তুর কারণ, প্রভাব, ফলাফল ইত্যাদির উত্তর দেয়ার পাশাপাশি গবেষকগণ প্রায়ই এমন কিছু উন্মোচন করেন, যা পরবর্তীতে নতুন তত্ত্ব নির্মাণ করে।
সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ উপস্থাপন – Draw Conclusions and Search for Indications
গবেষণার চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ উপস্থাপন। এক্ষেত্রে গবেষণার আলোকে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
গবেষণা যদি কোনো সমস্যা নিয়ে হয়, তাহলে সেই সমস্যার কারণ চিহ্নিত করার মাধ্যমে গবেষক একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হন। কিভাবে সেই সমস্যার সমাধান সম্ভব, তা উপস্থান করেন। অন্যান্য ক্ষেত্রে, বিষয়বস্তু সম্পর্কে গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
গবেষণা যে বিষয়েই হোক না কেন, এই পর্যায়ে পূর্বানুমান এবং উপাত্ত ও বিশ্লেষণের মধ্যকার সম্পর্ক সুস্পষ্ট, যথার্থ ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে গবেষণার উপসংহার টানতে হবে।
গবেষণার অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে গণমাধ্যমকে অধিকতর ফলপ্রসূভাবে গবেষণা করা যায় বলে গণমাধ্যম গবেষণায় এই পদ্ধতি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭১ থেকে ১৯৯৫ সালে সাংবাদিকতা বিষয়ক জার্নালসমূহে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের প্রায় ২৫% ছিল আধেয় বিশ্লেষণ পদ্ধতি-ভিত্তিক, যা ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯ সালের মাঝে সাংবাদিকতা বিষয়ক গবেষণার সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হয়ে ওঠে।12গ্রন্থ: Mass Media Research: An Introduction; লেখক: Roger D. Wimmer, Joseph R. Dominick;
তথ্যসূত্র - References
- 1নিবন্ধ: Content Analysis; প্রকাশনী: উইকিপিডিয়া;
- 2নিবন্ধ: The Structure and Function of Communication in Society; লেখক: Harold Lasswell; উদ্ধৃতি: “Who says what, to whom, why, to what extent and with what effect?”
- 3গ্রন্থ: Foundation of Behavioral Research; লেখক: Fred N. Kerlinger; উদ্ধৃতি: “Content analysis is a method of studying and analyzing communication in a systematic, objective and quantitative manner for the purpose of measuring variables.”
- 4গ্রন্থ: Content Analysis in Communication Research; লেখক: Bernard Berelson; : “a research technique for the objective, systematic and quantitative description of the manifest content of communication”
- 5গ্রন্থ: Research Methods and Analysis: Searching for Relationships; লেখক: M.H. Walizer, P.L. Weiner; উদ্ধৃতি: “Any Systematic procedure devised to examine the content of recorded information”
- 6গ্রন্থ: Content Analysis: An Introduction to Its Methodology; লেখক: Klaus Krippendorff; প্রকাশনী: Sage Publication; প্রকাশকাল: ১৯৮০; উদ্ধৃতি: “A research technique for making replicable and valid references from data to their context.”
- 7গ্রন্থ: The Practice of Social Research; লেখক: Earl R. Babbie; প্রকাশকাল: ২০০১; উদ্ধৃতি: “Content analysis is the study of recorded human communications. Among the forms suitable for study are books, magazines, Web pages, poems, newspapers, songs, paintings, speeches, letters, email messages, laws, and constitutions, as well as any components or collections thereof.”
- 8গ্রন্থ: Mass Media Research: An Introduction; লেখক: Roger D. Wimmer, Joseph R. Dominick;
- 9নিবন্ধ: Content Analysis: A Method in Social Science Research; লেখক: B Devi Prasad;
- 10গ্রন্থ: Mass Media Research: An Introduction; লেখক: Roger D. Wimmer, Joseph R. Dominick;
- 11নিবন্ধ: On the Theory of Scales of Measurement; লেখক: Stanley Smith Stevens;
- 12গ্রন্থ: Mass Media Research: An Introduction; লেখক: Roger D. Wimmer, Joseph R. Dominick;